ফজলে রাব্বীঃ
বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতে থমকে যাওয়া জনজীবনে স্বস্তির এক ছোঁয়া নিয়ে নাটোরের আকাশে উড়ছে শতশত বাহারি ঘুড়ি । লাল- নীল -সাদা -কালো- হলুদ- খয়েরি -এ যেন প্রকৃতির এক অবাক করা মনোরম দৃশ্য । বিকেল হলেই নাটোর জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের মাঠে, প্রান্তরে,রেল লাইনের ধারে চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর এক অন্যরকম আয়োজন। হাতে লাটাই আকাশে ঘুড়ি,দল বেঁধে লাইনে দাঁড়িয়ে চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর ধুম। এ যেন বাংলার অপরুপ সৌন্দর্যে শোভিত এক রঙিন পরিবেশ।
ছোট,বড় লম্বা,চিকন,অনেক রকম ঘুড়ি উড়ছে আকাশজুড়ে । তাছাড়াও কেউ কেউ ঘুড়ি ওড়ানোর টিম বানিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করছে, মিসাইল ঘুড়ি,কয়রা ঘুড়ি , চিল ঘুড়ি , সাপ ঘুুড়ি ও লাইটিং করে বানানো হচ্ছে ফানুষ ঘুড়ি । ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজনে বিমোহিত এখন নাটোরবাসী।
নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগর গ্রামের মমিন মোল্লা বলেন,ঘুড়ি আমার একটি শখ,নীল আকাশে ঘুড়ি উড়াতে আমার অনেক ভাললাগে।
নাটোর এন এস কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র মোঃ রাজা হোসেন বলেন,দেশের এমন পরিস্থিতে ঘুড়ি ওড়ানোর এই আয়োজন অনেকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে মানুষের মনে। তাছাড়া বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মধ্যেও ব্যাপকভাবে সারা জাগিয়েছে ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজন। বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবেই দেখছেন নাটোর জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ। কিন্তু-অনেক সময়ই দেখা যায় শহর কিংবা গ্রামে ঘুড়ি উড়ানোর সময় সেটা বিদ্যুৎ লাইনের কাছাকাছি চলে আসে। বিষয়টি নিয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
ঘুড়ি ওড়ানোর এমন দৃশ্য দেখে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক মামুনুর রশীদ বলেছেন, একটা সময় ছিল যখন আমরা বিকেল হলেই বেরিয়ে পরতাম ঘুড়ি ওড়াতে, যা বর্তমান সময়ে চোখে পরেনা। তবে করোনাকালীন এমন সময়ে ঘুড়ি বানানো ও ওড়ানোর আয়োজনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন,আমরা বাঙালী , আমাদের চিন্তা ও চেতনায় বাঙালী ঐতিহ্যের যে দম্ভ তা ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজনে আবারও প্রকাশ পেয়েছে।
ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজন ও মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সারা দেখে নাটোরের নলডাঙ্গার শহীদ নজমুল হক সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ তোতা বলেন,ঘুড়ি ওড়ানোটা বাঙালী ঐতিহ্যের এক আদি সভ্যতা।করোনাকালীন সময়ে নিজ গন্ডির মধ্যে থেকে ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজনকে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে আরও বলেন,যান্ত্রিক জীবনে করোনার টেনশনে মানুষ যখন ভীতসন্ত্রস্ত ও আতংকিত , তখন ঘুড়ি ওড়ানোর এমন প্রয়াসকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন তিনি ।